নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্কে পূর্ণতা আসে বিয়ের মাধ্যমে। নিজের পছন্দে বিয়ে করায় বিষয়টি মেনে নেয়নি ছেলের পরিবার। তাই ভাড়া বাড়িতে শুরু হয় কাঙ্খিত দাম্পত্ত জীবন। তবে কিছুদিন যেতে না যেতেই পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ে স্ত্রী। তৃতীয় পক্ষের আগমনে সুখের সংসারে নেমে আসে কাল বৈশাখী ঝড়।স্বামী বিষয়টি বুঝতে পারলেও কাউকে না জানিয়ে মুখ বুঝে সহ্য করেছেন।বুঝতে দেয়নি ভালোবাসার মানুষটিকে। এভাবেই চলছিলো সংসার। তবে একের পর এক একই ধরনের কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিলো পরকীয়ায় আসক্ত স্ত্রী।সর্বশেষ পরকীয়া প্রেমিকসহ গভীর রাতে এলাকাবাসীর হাতে আটক হয় রহস্যময়ী ওই নারী। বলছি মুক্তা খাতুন ও মঞ্জুরুল ইসলামের কথা। ২০১৮ সালে পরিবারের অমতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন দিনাজপুরের পার্বতীপুর পৌর শহরের রিফিউজি মার্কেটের আবুল কাশেমের ছেলে ব্যবসায়ী মঞ্জুরুল ইসলাম ও বাবুপাড়া মহল্লার গোলাম মোস্তফার মেয়ে মুক্তা খাতুন। সর্বশেষ গত সোমবার (২১ মে) বাবার বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে স্বামীকে ভাড়া বাড়ীতে যেতে নিষেধ করে মুক্তা।স্বামী না থাকার এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পরকীয়া প্রেমিক বজলুর রহমানকে ওই বাড়ীতে ডেকে নেয়। এদিকে, স্বামী মঞ্জুরুল আলম গভীর রাতে বাড়ি ফিরে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় একই ঘর থেকে অপ্রীতিকর অবস্থায় পরকীয়া প্রেমিকসহ স্ত্রী মুক্তা খাতুনকে উদ্ধার করে।পরে পুলিশ পশ্চিম হুগলীপড়া বাসা থেকে তাদের উদ্ধার করে পার্বতীপুর মডেল থানায় নিয়ে যায়।স্বামী মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন,ওইদিন রহস্যজনকভাবে বাবার বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে আমাকে ভাড়া বাড়িতে ফিরতে মানা করে মুক্তা। তবে, ব্যবসায়ীক ব্যস্ততার কারণে গভীর রাতে বাসায় গিয়ে তাদের কথা বলার আওয়াজ শুনতে পাই।বিষয়টি বুঝতে পেরে আমি ডাকাডাকি করলেও দরজা খুলেনি তারা। পরে স্থাণীয়দের সহযোগীতায় দরজা খুলতে সক্ষম হলে বক্স খাটের নিচ থেকে বজলুর রহমান নামে ওই ব্যক্তিসহ মুক্তাকে আটক করে এলাকাবাসী। পরে পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে গেলেও রস্যজনক কারণে মুক্তাকে ছেড়ে দিয়ে বজলুর রহমানকে আদালতে পাঠায়। ঘটনার দিন ওই ছেলে মুক্তাকে তার পাওনা টাকা দিতে গিয়েছিলো বলে জানিয়েছে পুলিশ। যদি সে টাকা দিতে যেত তবে খাটের নিচে লুকিয়ে ছিলো কেন? এমন প্রশ্নে পুলিশের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, এর আগে একই ঘটনায় বাঁধা দেয়ায় স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এসময় মঞ্জুরুল তার স্ত্রী মুক্তা খাতুনের সকল পাওনা পরিশোধ পূর্বক তালাকের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে ভূল স্বীকার পূর্বক ভবিষ্যতে কোন প্রকার অনৈতিক কর্মকান্ড করবে না, সেই সাথে ভবিষ্যতে এমন কোন কর্মকান্ড সংঘঠিত হলে দেন মোহর প্রদান ছাড়াই মঞ্জুরুল তাকে তালাক দিতে পারবে মর্মে আদালতে ক্ষমা প্রার্থনা করে নিজেকে সোধরানোর জন্য সময় চান। আদালতের নির্দেশে জাগ্রত নারী উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরের মাধ্যমে সমস্যার সাময়িক সমাপ্তি ঘটে।এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরদিন মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে মুক্তা খাতুনের নেতৃত্বে দূর্বৃত্তরা তার উপর হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে । পরে হামলার শিকার মঞ্জুরুল ইসলামকে উদ্ধার করে পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। হামলার বিষয় উল্লেখ করে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন ভূক্তভোগী মঞ্জুরুল। মডেল থানার ওসি আবুল হাসনাত খান বলেন, ৯৯৯ এ কল পেয়ে পুলিশ ছেলে মেয়েকে উদ্ধার করে। মেয়ের কোন প্রকার অভিযোগ না থাকায় তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেই সাথে ছেলেকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।