তারেক রহমান তারু ।(ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধিঃ)
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় বিপরীত দিক থেকে ছোড়া গুলিতে বুক, হাত, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি বিদ্ধ হয় সিলেট মদন মোহন সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আকবর হোসেনের। অবশেষে উন্নত চিকিৎসা পাচ্ছেন আকবর। “আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ আকবরের চিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় প্রতিবন্ধী বাবা” এই শিরোনামে জাতীয় ও স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর অর্থাভাবে চিকিৎসা বঞ্চিত আকবর হোসেনের চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসেন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী।
চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে চাঁদপুর পুলিশ লাইনের একটি এ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হানিফ সরকার জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ আকবর হোসেনের চিকিৎসা হীনতার সংবাদ চাঁদপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুর রকিবের নজরে আসে। তার নিদের্শে আমিসহ থানা পুলিশ আকবরের বাড়িতে গিয়ে তার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে চিকিৎসা বিষয়টি নিশ্চিত হই। পরে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে চাঁদপুর পুলিশ লাইনের একটি এ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য আকবর হোসেন পাঠানো হয়।
আহত আকবর হোসেনের বাবা রওশন আলী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তার ছেলে বুক, হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। পুরো শরীরজুড়ে রয়েছে ছররা গুলির ক্ষতবিক্ষতের চিহ্ন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় ছেলের কোনোমতে চিকিৎসা করালেও পুরো সুস্থ করে তুলতে পারেননি। অন্তর্র্বতীকালীন সরকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত সিংহভাগ শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যয় বহন করলেও আমার ছেলের বেলায় তা জোটেনি। আজকের পত্রিকায় নিউজ প্রকাশেরপর অবশেষে পুলিশ তার ছেলের চিকিৎসার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে।

আকবর হোসেনের মা ফেরদৌসী বেগম জানান, পুলিশ আমাদের বাড়িতে গিয়ে আকবরের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেয়। শনিবার সকালে আমাদের ঢাকা যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে আসতে বলেন। এসপি ও ওসির সহায়তায় আমার ছেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা যাচ্ছি।
আকবর হোসেন জানান, আন্দোলনে পুলিশ গুলি করলেও আজ পুলিশই আমাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠাচ্ছে। আজকের পত্রিকা ও বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট সিলেটে কলেজ ক্যাম্পাস এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় বিপরীত দিক থেকে ছোড়া গুলিতে বুক, হাত, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছররা গুলি বিদ্ধ হয় সিলেট মদন মোহন সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আকবর হোসেন। সে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের দায়চারা গ্রামের দিনমজুর প্রতিবন্ধী রওশন আলী ও ফেরদৌসী বেগম দম্পতির ছেলে।
ওই সময়ে আহত অবস্থায় তাকে সিলেট সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বলা হলেও অর্থাভাবে চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত সে। বর্তমানে গত একমাস ধরে গুলির ক্ষত নিয়ে বাড়িতে বিছানায় পড়ে থাকলেও পঙ্গু বাবা ছেলের চিকিৎসা না করাতে পেরে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল।